রোহিঙ্গাদের অপরাধ দমনে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন

শফিক আজাদ, উখিয়া :

রোহিঙ্গা শিবিরে দিন দিন বাড়ছে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড। এসব অপরাধে জড়িত রয়েছে ক্যাম্পে একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ। যাদের কাছে রোহিঙ্গা থেকে শুরু করে স্থানীয়রা পর্যন্ত জিম্মি। বিশেষ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিজেদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্ধের অপরাধ ক্রমাগত বাড়ছে। যাহা নিয়ন্ত্রণ করছে ক্যাম্প প্রশাসনকে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ঠরা।

সম্প্রতি আবু তাহের নামের এক রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে পুলিশ গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসার সময় একদল রোহিঙ্গা উক্ত আসামীকে ছিনিয়ে নিতে হামলা চালায় পুলিশের উপর। এসময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে ফাঁকা গুলি বর্ষণ করতে বাধ্য হয়। এ ধরনের ঘটনায় প্রশাসন ও স্থানীয়দের ভাবিয়ে তুলেছে।

জানা গেছে, ক্যাম্পে যে সমস্ত পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে তার থেকে বেশিরভাগ রোহিঙ্গা এলাকা নিয়ন্ত্রণের বাইরে। চারদিক খোলা থাকায় নির্বিঘেœ ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গারা পালিয়ে যাচ্ছে। তারা ক্যাম্পে থাকে ও খায়। আর অবাধে অপরাধ করে বেড়াচ্ছে। গহীন অরণ্যে গড়ে তুলেছে অপরাধের স্বর্গরাজ্য। মাদক ও অস্ত্র পাচারের মতো কাজে তারা জড়িত। যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরের বাইরে হওয়ায় তা নিয়ন্ত্রণ করা অনেক সময় সম্ভবই হয় না।

সূত্রে আরো জানা গেছে, প্রতিদিন উখিয়ার বালুখালী, ঘুমধুম, ধামনখালী, আঞ্জুমানপাড়া সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গারা জেলে সেজে মিয়ানমারে প্রবেশ করে থাকে। তারা রাতের বেলায় বিপূল পরিমাণ ইয়াবা চালান নিয়ে ক্যাম্পে ঢুকে পড়ে। কারণ দিনের বেলায় ৫টার পর থেকে ক্যাম্পে ভিতরে কোন প্রকার অপরিচিতি, বহিরাগত লোকজন প্রবেশ নিষেধ। তাই রাতের বেলায় ক্যাম্প থাকে ওই সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপের

স্থানীয় পুলিশ ও অন্যান্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বর্তমানে যে অবস্থায় রোহিঙ্গাদের রাখা হয়েছে, তাদেরকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তাদের মধ্যে হানাহানি, সংঘর্ষ, খুন, গুম বেড়েই চলছে। রোহিঙ্গারা খুবই বেপরোয়া ও হিং¯্র। বড় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটানোর আশঙ্কা রয়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে। দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা বেষ্টনিতে নির্ধারিত জায়গায় রাখা ছাড়া কোন বিকল্প নেই। কে কি বললো সেদিকেও নজর দেওয়ার প্রয়োজন নেই বলে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা

অভিযোগ রয়েছে এক শ্রেণীর এনজিও রোহিঙ্গাদের এই এলাকায় থাকার জন্য নানাভাবে প্রভাবিত করে আসছে। এসব এনজিওর কারণে রোহিঙ্গারা সন্ত্রাসসহ জঙ্গিবাদের মতো ভয়ঙ্কর কর্মকান্ডে লিপ্ত হচ্ছে। আর এসব কাজে অর্থ যোগান দিচ্ছে ওই সব এনজিও। ভাসানচরের মতো সুন্দর নিরাপদ পরিবেশে রোহিঙ্গাদের জন্য প্রস্তুত রাখা হলেও এনজিওগুলোর কারণে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করা সম্ভব হচ্ছে না। এই এনজিওগুলো আন্তর্জাতিক মহলে রোহিঙ্গাদের নিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে। রোহিঙ্গাদের সাহায্য-সহযোগিতার নামে এরা কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আসছে। আর এনজিও কর্মকর্তারা সমুদ্র সৈকতে বিলাসবহুল জীবন-যাপন

উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের বলেন, রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণের জন্য ইতিমধ্যে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প ৫টি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। এসব ক্যাম্পে প্রায় ৩শতাধিক সদস্য নিয়োজিত আছে। যারা ক্যাম্পের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের কাজে লিপ্ত রয়েছে। এরপরও গুজবের ভারে রোহিঙ্গারা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে দ্বিধা করেনা, এসময় তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে প্রশাসনকে হিমশিম খেতে হয়।